কেন্দ্রের অনুমতি ছাড়া ৫৭ ধারায় মামলা নয়

Published On : 10-Aug-2017 326 প্রকাশক : Nabid Kauser Moon

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় যত্রতত্র মামলা না করার বিষয়ে কেন্দ্র থেকে আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একান্তই এ ধরনের মামলা করার প্রয়োজন হলে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের পূর্বানুমতি নিতে হবে।

গত সপ্তাহের এই সংক্রান্ত নির্দেশনা সব জেলা সভাপতিকে মৌখিকভাবে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। ৫৭ ধারার অপব্যবহার রুখতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী সূত্র জানিয়েছে।

উল্লেখ্য, পুলিশ সদর দপ্তরের হিসাবে এ বছরেই তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি আইনে প্রায় চার শ মামলা হয়েছে, যার বেশির ভাগই হয়েছে আইনের বিতর্কিত ৫৭ ধারায়।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, খুলনায় মরা ছাগল নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে স্থানীয় একজন সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ ঘটনায় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নারায়ণ চন্দ্র চন্দের ইন্ধনের অভিযোগ আসার পর এ নিয়ে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এ বিষয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের নারায়ণ চন্দ্র চন্দের সঙ্গে কথা বলে কৈফিয়ত চান। এরপরই সাংবাদিক ছাড়া পান। ওবায়দুল কাদের পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হককেও ফোন করেন। পুলিশ সদর দপ্তরের অনুমতি ছাড়া ৫৭ ধারায় মামলা না নেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর আইজিপি মাঠপর্যায়ে পুলিশকে এই বার্তা দেন।

এসব কিছুর মধ্যে হবিগঞ্জ সদর উপজেলা শ্রমিক লীগের সদস্যসচিব জামাল আহমেদ ভিন্ন কৌশল নেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়ে ফেসবুকে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন, এমন অভিযোগ এনে হবিগঞ্জে আদালতে গিয়ে জেলা যুবদলের যুগ্ম সম্পাদক আরব আলীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। এরপরই আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব জেলা নেতাদের ফোন দিয়ে ৫৭ ধারায় মামলা করার বিষয়ে ইচ্ছামতো মামলা না করার নির্দেশনা দেয়। প্রতিটি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ক্ষেত্রবিশেষে দলের সাধারণ সম্পাদকও ফোন করে জেলা সভাপতিকে এ নির্দেশনা জানিয়ে দেন।

জানতে চাইলে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি খায়রুল আনাম প্রথম আলোকে বলেছেন, ৫৭ ধারায় মামলা না করার বিষয়ে নির্দেশনা আছে। কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে না করা হয়েছে।

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, ৫৭ ধারার অপব্যবহারের কারণে সরকার সমালোচনায় পড়েছে। ব্যক্তিগত আক্রোশে সরকারি দলের লোকজন এর অপব্যবহার করছে। ফলে যে উদ্দেশ্য নিয়ে সরকার এ আইনটি করেছিল, তা ভিন্ন খাতে চলে যাচ্ছে। নির্বাচনের আগে এই প্রবণতা দলের জন্য ক্ষতিকর মনে করেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ প্রথম আলোকে বলেন, ৫৭ ধারার অপব্যবহার বন্ধের লক্ষ্যেই জেলা নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ ধরনের মামলা করতে হলে কেন্দ্রের অনুমোদন লাগবে।

Leave your comment